History of the College
ভূমিকাঃপ্রতিটি সৃষ্টির পিছনেই থাকেকোন না কোন মহৎ উদ্দেশ্য এবং এক এক বা একাধিক লোকের আত্মত্যাগ সৈয়দা জামিল খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজটির পিছনেও আছে তেমনি একজন সৃষ্টিকর্তা, একজন কারিগর, একজন উদ্দ্যোক্তা, একজন ফাউন্ডার,একজন দক্ষ সংগঠক । আর তিনি হচ্ছেন সৈয়দা জামিলা সালেহ্ । একজন মহিয়সী নারী সমাজ সচেতন একজন রমনী যিনি স্বমহিমায় উজ্জল । অবহেলিত গ্রামীন জনপদের নারী শিক্ষার অগ্রদূত মহিয়সী নারী সৈয়দা জামিলা সালেহ । প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির জন্য তিনি হয়েছেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবার কাছে মহিয়সী জননী ।
প্রতিষ্ঠান গড়ার পূর্ব কারনঃঝালকাঠী জেলার, সদর উপজেলাধীন ১০নং নথুল্লাবাদ ইউনিয়নটি ছিলো থানা শহরের সাথে স্বাভাবিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটি অবহেলিত এলাকা । তাই অত্র অঞ্চলের নরীরা উচ্চ শিক্ষার আলো থেকে সর্ব দাই বঞ্চিত হতো। এই ঘটনা মহিয়সী নারী সৈয়দা জামিলা সালেহ কে ব্যথিত করে। তাই অত্র অঞ্চলের নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ১৯৮০ সালের ৭ ই ফেব্রুয়ারী চাচৈর গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দা জামিলা সালেহ্ নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং ঐ বৎসরই মাধ্যমিক শাখার জন্য যশোর শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করেন। অবশ্য সৈয়দা জামিলা সালেহ্ দম্পত্তি ১৯৭৮ সালে মার্চ মাসে তার নিজস্ব বাড়ির নিকটস্থ চাচৈর সরকারী প্রাথামক বিদ্যালয় মাঠে দরিদ্র মানুষের জন্য কিছু সাহায্য সামগ্রী দিতে গিয়ে তারা লক্ষ করলেন যে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থিক সাহায্য যতটা দরকার ঠিক ততটাই দরকার শিক্ষা গ্রহনের ব্যবস্থা করা । উক্ত অনুষ্ঠানে মরহুম সৈয়দ এম সালেহ্ এবং মরহুমা সৈয়দা জামিলা সালেহ্ স্বেচ্ছায় এ অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা গ্রহনের জন্য সাহায্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেন । এবং তারই ধারাবহিকতায় নানা ঘটনার পর প্রতিষ্ঠা পায় সৈয়দা জামিলা খাতুন নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯৮১ সাল থেকে ইক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে বিশেষ ব্যবসাথায় এস এস সি পরিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়, এবং ১৯৮৭ সালে মাধ্যমিক শাখার স্বীকৃতি লাভ করে। উক্ত প্রতিষ্ঠান টি ১৯৮০ সালে মাত্র ১৪ জন ছাত্রী নিয়ে প্রত্যন্ত অবহেলিত, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গ্রামীন জনপদের শিক্ষার উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেন । আর সে থেকে অদ্য পর্যন্ত শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার গুরুদায়িত্ব বহন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
যেভাবে পথচলাঃযে প্রতিষ্ঠান টি ১৯৮০ সালে মাত্র ১৪ জন ছাত্রী নিয়ে যাত্রা আজ সে প্রতিষ্ঠানে প্রায় চার শতাধিক ছাত্রী লেখাপড়া করছে। কাঠ বাশ ও গোল পাতার দিয়ে গড়া যে প্রতিষ্ঠান টি ১৯৮০ সালে হাটি হাটি পায়ে যাত্রা শুরু করে তা ১৯৮৭ সালে মাধ্যমিকে উন্নিত হয়, এবং ২০০০ সালে কলেজে রুপান্তরিত হয়।বর্তমানে উভয় শাখায় প্রায় ৪ শতাধিক ছাত্রী তাদের শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করছে ।
অবস্থান ও পরিবেশঃঝালকাঠী জেলা সদর থেকে ১৪ কি.মি দুরে গ্রামীন পরিবেশের চাচৈর গ্রামে ১ একর ৮৫ শতাংশ জমির উপর গড়ে উঠেছে একটি দোতলা ভবন। সৈয়দা জামিলা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ । সামনে খেলার মাঠ, একটি দিঘী, পাশেই রয়েছে মেহগনী, চাম্বল ও বিভিন্ন ফলজ গাছের বাগান ।
প্রতিষ্ঠানের সুনাম বয়ে আনলো যারাঃ১৯৮৭ সালে ১ম বিভাগ পেলো মমতাজ, সাহানা, শেফালী, হোসনেয়ারা এবং এর প্রতি বৎসরই কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করিয়া আসতেছে অদ্য পর্যন্ত। ২০০৯ এবং ২০১২ সালে জিপিএ ৫ অর্জন করে। ২০১১ সালে জে এস সি পরিক্ষায় বৃত্তি লাভ করে । ২০১০ সালে জে এস সি তে শতভাগ পাশ করে। বিদ্যালয় শাখার শুরু থেকে অদ্য পর্যন্ত সকল পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষ জনক এবং প্রশংসার দাবীদার ।
এইচ এস সি পরীক্ষাঃ১০ ই ডিসেম্বর ২০০০ সালে বিদ্যালয়টি কলেজে উন্নিত হয় এবং ২০০৩ সালে প্রথম পাঁচ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে আর আজ ২০১২ সালে ৬৫ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। শিক্ষাবর্ষে ২০০০-২০০১ ১৭ জন ছাত্রী নিয়ে যার পথ চলা সে প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১২ সালে ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে ১৬৫ জন ছাত্রী লেখাপড়া করছে।
অনুষ্ঠান সমূহঃপ্রতি বছর নিয়মিত ভাবে পালন করা হয় জাতীয় দিবস সমূহ যেমন একুশে ফেব্রুয়ারী · ১৬ ই ডিসেম্বর, ২৬ শে মর্চ সহ অন্যান্ন গুরুত্বপূর্ন দিন গুলো । এস এস সি ও এইচ এস সির বিদায় অনুষ্ঠান পালন করা হয় । ঝাঁকজমক সহকারে পালন করা হয় একাদশ শ্রেনীর নবীণ বরণ ও জে এস সি ও এস এস সির এ প্লাস প্রাপ্তদের সংবর্ধণা । প্রতিষ্ঠানের একক প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা জামিলা সালেহ ও তৎকালীন একক দাতা সৈয়দ এম সালেহ্ এর মৃত্যূ বার্ষিকীতে শোকসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতি বৎসরই বাষরিক ক্রিড়ানুষ্ঠান ও শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে প্রতিবছর তিন দিন ব্যাপি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
আমরা যাদেরকে হারিয়েছি :(১)জনাব সৈয়দ এম সালেহ্ (তৎকালীন একক দাতা) (২) সৈয়দা জামিলা সালেহ্ ( একক প্রতিষ্ঠাতা ও আজীবন সভাপতি) (৩) মাওলানা সৈয়দ আহম্মদউল্লাহ ( সহঃ শিক্ষক) (৪) জাহানারা বেগম (আয়া) ।
উক্ত প্রতিষ্ঠান টি আজ সুন্দর ভাবে পরিচালনা করার জন্য সৈয়দ এম জামিলা সালেহ্ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি কর্তৃক বিভিন্ন আর্থিক অনুদান নির্ভর বিশেষ করে কলেজ শাখার সম্পূর্ন ব্যয় উক্ত সোসাইটি বহন করে। এছাড়া কলেজ শাখার সকল ছাত্রীর নিম্নক্তো সুবিধাদী প্রদান করা হয়।
•সকল ছাত্রীর ভর্তি ফ্রী ।
•সকল ছাত্রীর বীনা বেতনে অধ্যায়ন ।
•সকল ছাত্রীর এইচ এস সি ফরম ফিলাপ ফ্ৰী ।
•ছাত্রীদের যাতায়াতের ১-২৫ কি.মি. ছাত্রীদের জন্য গাড়ীর ব্যবস্থা ।
•৪ কি.মি ১২ এর কি.মি. এর দুরত্বে ছাত্রীদের দৈনিক যাতায়াত খরচ প্রদান ।
•সকল ছাত্রীদের সকল ধরনের পাঠ্য পুস্তক ও কলেজ ইউনিফর্ম ফ্রী ।
•মেধাবী ও গরীব ছাত্রীদের সোসাইটি কর্তৃক সাহায্য প্রদান করা হয়।